মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১ মার্চকে বীমা দিবস ঘোষণা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য এটা ছিল রাজনীতির বাইরে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা

তাই এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১ মার্চকে বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আজ (বুধবার) শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে।

এছাড়া আলোচ্যসূচিতে রয়েছে ভোটার তালিকা (সংশোধন) আইন ও জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালার খসড়া অনুমোদনের প্রস্তাব। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

১৭ মার্চ থেকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে সরকার। ওইদিন থেকে আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে মুজিববর্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারি বিকাল ৫টা থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগণনা শুরু হতে যাচ্ছে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদানের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তারা এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। মন্ত্রিসভার সম্মতি সাপেক্ষে এখন থেকে প্রতিবছর ১ মার্চ বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে আইডিআরএ সদস্য গকুল চাঁদ দাস যুগান্তরকে বলেন, রাজনীতির বাইরে এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রথম ও শেষ চাকরি। চিফ এজেন্ট হিসেবে তিনি আলফা ইন্স্যুরেন্সে চাকরি করাকালীন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অফিস করতেন।

পরবর্তীকালে তিনি এ কোম্পানিতে গাজী গোলাম মোস্তফা, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ও ঢাকার মোহাম্মদ হানিফকেও যোগদান করান। তাই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১ মার্চকে বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ১ মার্চকে ‘ক’ ক্যাটাগরিভুক্ত দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছি আমরা। তবে এ ব্যাপারে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৫৮ সাল থেকে আইযুব খানের মার্শাল ল’ জারি হওয়ার কারণে দেশে রাজনীতি বন্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধু আপাতমস্তক একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তার পক্ষে রাজনীতি না করে থাকা সম্ভব ছিল না। এ অবস্থায় তিনি আলফা ইন্স্যুরেন্সে যোগ দিয়ে চাকরির আবরণে রাজনীতি করতেন।

গাজী গোলাম মোস্তফা, জহুর আহমেদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ হানিফকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট যেতেন। সেখানে বীমা কোম্পানির কাজে গেলেও তিনি লোকজনের সঙ্গে দেখা করে নানা ধরনের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দিতেন।

আইডিআরএ সূত্র জানায়, পৃথিবীর অনেক দেশেই বীমার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য একটি দিন, সপ্তাহ অথবা মাসকে বীমা সেবা দিবস, সপ্তাহ বা মাস হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশে কোনো বীমা দিবস না থাকলেও বীমা নীতি ২০১৪তে বীমা দিবস রাখার বিষয়টি স্থান পায়। পরে ২৬ জানুয়ারি আইডিআরএ যাত্রা শুরুর দিনটিকে বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ট্রাস্ট ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ১৯৬০ সালের ১ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। তাই এখন এই দিনটিকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।